সম্পূর্ণ নিজেদের তত্তাবধনে সংগ্রহ করা কাপ্তাই লেকের অথেনটিক ন্যাচারাল রুই মাছ। - ২-৮কেজি।
যে কারণে আমরা কাপ্তাই লেকের ফ্রেশ রুই মাছ খাবো—
*৭৯ গ্রাম ক্যালরি,
*৭৬.৭ গ্রাম পানি,
*২.৬৬ গ্রাম নাইট্রোজেন,
*১৬.৬ গ্রাম প্রোটিন ও ১.৪ গ্রাম ফ্যাট এবং ১০০ এমজি সোডিয়াম রয়েছে।
রুই মাছে আছে—
*পটাশিয়াম,
*ক্যালসিয়াম,
*ম্যাগনেসিয়াম,
*ফলফরাস,
*আয়রন এবং কপার।
এসব পুষ্টিকর উপাদানগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
রুই মাছ থেকে আরো যে সমস্ত বেনিফিট পাওয়া যায় তা হলো—
তাই মানব দেহের জন্য এ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও পুষ্টির উৎস হিসেবে নিয়মিত কাপ্তাই লেকের রুই মাছ খাওয়া উচিত।
| বি:দ্র: আমাদের মাছগুলো শতভাগ ফরমালিনমুক্ত। তাই স্টক করা হয়না, অর্ডার কনফার্ম হওয়ার ১-৪ দিনের এবং মাছ ধরার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডেলিভারি করা হয়। ওজনের তারতম্যের কারণে মূল্য কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। ধন্যবাদ! |
কাপ্তাইয়ের ন্যাচারাল দেশি বড় রুই—
উপমহাদেশে বহুল পরিচিত সুস্বাদু ও প্রোটিনসমৃদ্ধ মাছের তালিকায় "পাহাড়ি লেকের রুই মাছের" নাম শীর্ষে রয়েছে।
রুইকে ইংরেজিতে Rohu Carp বলে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে Labeo rohita নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিকভাবে এ মাছটিকে 'রোহু' নামে ডাকা হয়, এবং বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় বাজারে রুই, রোহিতা, রুহিত, রাউ, গরমা, নলা, নওসি ইত্যাদি নামে সম্বোধন করা হয়। এটি হচ্ছে মেজর কার্প জাতীয় একটি মাছ। (উল্লেখ্য যে, কার্প জাতীয় মাছের মধ্যে যে মাছগুলো আকৃতিতে বেশ বড় সাইজের হয়, এবং দ্রুত বর্ধনশীল ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সে সমস্ত মাছগুলোকে মেজর কার্প বলে।)
রুই মাছ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার ও ভারতের নদীতন্ত্রের প্রাকৃতিক প্রজাতি। মিষ্টি জলের পুকুর, কাপ্তাই-হ্রদ, প্রবাহমান নদী ও মোহনায় এ প্রজাতি মাছটির বেশ দেখা মিলে। পাহাড়ি-লেকের অতূলনীয় স্বাদু মাছ হিসেবে শ্রীলঙ্কা, চীন, রাশিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও আফ্রিকান দেশগুলোতে ব্যাপকভাবে পরিচিত ও জনপ্রিয়।
রুই মাছের দেহ কিছুটা মাকু আকৃতির ও মাথা, লেজ ক্রমশ সরু হয়, এবং প্রস্থ থেকে উচ্চতা বেশি। শরীরের উভয়পাশে সমানভাবে চ্যাপ্টা হয়। সমস্ত শরীর মসৃণ রূপালী আঁশ দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে সাজানো ও আবৃত করা থাকে। ধূসর বর্ণের পাখনার এ মাছের পৃষ্ঠদেশের আঁশের কেন্দ্র লাল-ভাব এবং প্রান্ত কালো বর্ণের রুপ নেয়। কাপ্তাই লেকের রুই মাছের পিঠ ও পিঠের নিচের দিকটি বাদামি রঙের এবং পেট রুপালি সাদা রঙের হয়।
এ মাছটির দেহ তিনভাগে বিভক্ত।
১. মাথা ২.দেহকান্ড ৩.লেজ।
রুইয়ের মাথা চারটি অঙ্গ নিয়ে গঠিত। যথাক্রমে— মুখ, চোখ, নাসারন্ধ্র, ও কানকো।
কাপ্তাই-রুই এর দেহ অগ্রভাগ থেকে কানকো এর পশ্চাত প্রান্ত বিস্তৃত হয়, এবং দেহের দুই পাশে ছোট ছিদ্রগুলো সারিবদ্ধভাবে আইশের নিচে অবস্থিত একটি লম্বা খাদের সাথে গিয়ে যুক্ত হয়। প্রবাহমান হৃদপিণ্ডের কারণে রুই মাছের হৃদপিণ্ডকে ভেনাস হার্ট বা শিরা হৃদপিণ্ড বলা হয়। এরা লম্বায় ৪-৫ ইঞ্চি হতে পারে এবং সূত্রমতে এদের ওজন এ পর্যন্ত সর্বচ্চ ৪৫ কেজি + হয়েছিলো। সাধারণত রুই প্রজাতির মাছটি ১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
প্রধানত লেকের চাষমুক্ত রুই মাছ প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ করে। রুইকে শাকাশ মাছ বলা হয়, কারণ এরা পানির মধ্যস্তরে চলাচল করে থাকে। এদের মুখমন্ডল নিচের দিকে হওয়ায় এবং পুরু ঠোঁট থাকার কারণে ন্যাচারাল জলজ উদ্ভিদ, আগাছা ও জলের তলদেশ থেকে জৈব পদার্থ খেয়ে জীবনধারণ করে৷ এছাড়াও প্ল্যাঙ্কটন জাতীয় খাবার যেমন— ফাইটোফ্লাজিলেট, ডেসমিড, শৈবাল, রেনু ইত্যাদি খেয়ে থাকে।
সরু চুলের ন্যায় ফুলকা রেকার দেখে প্রমাণ পাওয়া যায় এ মাছটি অতিক্ষুদ্র প্ল্যাংক্টনও ছেকে খায়। রুইদের পোনা ঝাঁক বেধে চলে, প্রাপ্ত বয়স্ক মাছ সাধারণত পৃথক জীবন অতিবাহিত করে। স্বাভাবিকভাবে রুই মাছ ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রায় বাঁচতে পারে না।
দু'বছর বয়সে একটি রুই মাছ তার প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে। বৃষ্টির সিজনে প্লাবিত হ্রদ-নদীতে (বিশেষত জলজ উদ্ভিদময় স্থানে) রুই মাছ প্রজননে অংশ নিয়ে থাকে। এক প্রজনন ঋতুতে একটি মা মাছ প্রায় দুই থেকে ত্রিশ লাখ ডিম দিয়ে থাকে, যা মাছের বয়স, দৈর্ঘ্য ও ওজনের উপর নির্ভর করে কম বেশি হতে পারে।
এদের ডিম দেয়ার সময়কাল জুন ও জুলাই মাস এর মধ্যেবর্তী সময় হয়ে থাকে। এরা স্রোতময় নদী ও পাহাড়ি লেকের স্বচ্ছ পানিতে প্রজনন করে, বদ্ধ ও নোংরা পানিতে নয়। কাপ্তাই-রুই স্বাদে আকর্ষণীয় হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপকভাবে চাহিদা রয়েছে।
পাহাড়ি লেকের রুই মাছের পূষ্টিগুণ—
প্রাকৃতিকভাবে কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ পানিতে বেড়ে ওঠা ফ্রেশ-দেশি তাজা-মাছ হওয়ায় এটি খেতে খুবই টেষ্টি ও হেলদি হয়ে থাকে। গবেষণা সূত্রে দেখা যায়—
৯.৫৬ শতাংশ জলীয় অংশ,
৭৪.৬ শতাংশ ক্যালসিয়াম,
৬৫০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম,
২৮৮ মিলিগ্রাম সোডিয়াম,
১০১ মিলিগ্রাম কলিন, ৮১৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এম সি জি, ফসফরাস, আয়রনসহ আরো ইত্যাদি ভিটামিন সমৃদ্ধ ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিগুন এ মাছটিতে পাওয়া যায়। এর তাপমূল্য ৯৭ ক্যালরী! এটি নিয়মিত গ্রহণের ফলে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ, দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি, জয়েন্টের কর্মসঞ্চলতা বৃদ্ধি, হার্ট চাঙ্গা রাখা,রক্ত প্রবাহের উন্নতি, ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি সহ শারিরীক ও মানষিকভাবে যাবতীয় নানা ধরনের ঘাটতি দূর করণে বিশেষভাবে কাজ করে।
কাপ্তাই হ্রদের অরিজিনাল দেশি রুই কেন খাবেন? এর উপকারিতাসমূহ: | Benefits of Rui Fish |
কাপ্তাই হ্রদের ফ্রেশ তাজা রুই মাছ খাওয়ার পিছনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। এর পুষ্টিগুণ থেকে শুরু করে স্বাদ এবং পরিবেশগত টেকসইতার দিক থেকে এটি অত্যন্ত উপকারী। দেশি ন্যাচারাল রুই মাছের ঝোল-ঝাল পছন্দ করেন না, এমন মানুষ বোধ হয় খুব কমই আছেন। আমাদের অধিকাংশের বাড়িতে প্রায় এ মাছটি রান্না করা হয়। কিন্ত স্বাদুময় কাপ্তাইয়ের রুইয়ে কত কি উপকারিতা রয়েছে, তা কি আমরা জানি? চলুন এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক তাহলে!
১.স্বাদ ও মানের বৈশিষ্ট্য
কাপ্তাই হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশে দেশি রুই মাছ বড় হওয়ার ফলে এর স্বাদ ও মান অত্যন্ত উন্নত। এই মাছের মাংস মিষ্টি, নরম ও সুমিষ্ট হয়, যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। প্রাকৃতিক খাদ্য খেয়ে বড় হওয়ায় এর স্বাদে এক ধরনের প্রকৃতির ছোঁয়া থাকে, যা চাষকৃত মাছের তুলনায় আলাদা।
২.প্রাকৃতিকভাবে বড় হওয়া কাপ্তাই হ্রদের দেশি রুই মাছের মধ্যে কোন কৃত্রিম হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয় না। ফলে দেশি এ মাছটি উচ্চমাত্রার প্রোটিন-সমৃদ্ধ হয়, যা খেলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা যায়। এটি কৃত্রিম খাদ্যের পরিবর্তে প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণের একটি নিরাপদ বিকল্প।
৩.রুই মাছ শরীর ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে- রুই মাছে প্রোটিন, ক্যালোরি, তন্তু, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়ামের মতো উপাদানগুলি পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে। আরো রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফ্যাট-অ্যাসিড প্রদাহ কমাতে দেহের ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল কমাতে সাহায্য করে। অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন, রক্ত জমাট বাঁধা রুখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এবং শরীরের কোষের গঠন ও পুনর্গঠন পেশি শক্তি বাড়াতে কাজ করে।
৪.লেকের তাজা দেশি রুই মাছের প্রোটিন জয়েন্ট টিস্যু ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১০০ গ্রাম রুইতে ১৯ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এটি খেলে গাঁটের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন শারীরিক কার্যক্রমে সহায়ক হয়।
৫.ক্যানসার কোষসমূহ ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে রুই মাছের। মিঠা জলের এ মাছে লিপিডে PUFA নামে একটি উপাদান পাওয়া যায়। যা ক্যানসার কোষ ধ্বংস করতে কাজ করে থাকে।
৬.কাপ্তাইয়ের রুই মাছে থাকা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড স্মৃতিশক্তি বাড়াতে, মস্তিষ্ক ভাল রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় উঠে এসেছে এ মাছটি নিয়মিত খেলে বয়সকালে স্মৃতিশক্তি হারানোর ঝুঁকি কম থাকে।
৭.ওজনের ভারসাম্যতা বজায় রাখে। এতে তুলনামূলক ভাবে কম ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট থাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। অতিরিক্ত খুদার সমস্যা দূর করে এবং মেটাবলিজম বাড়াতেও সহায়ক! এছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন ও খনিজ শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৮.ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পাহাড়ি লেকের রুই মাছ হতে পারে একটি উত্তম বিকল্প! এটি প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস, যা কোলাজেন এবং এলাস্টিন উৎপাদনে বেশ সাহায্য করে। ত্বককে তরতাজা রাখার পাশাপাশি এতে ভিটামিন ই থাকে। আরো থাকে সেলেনিয়াম এবং জিঙ্কের মতো খনিজ পদার্থ!
৯.টাটকা রুই মাছ খাওয়া স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রোগে উপকারী। রুই মাছের ব্যবহার ফুসফুসের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, যা হাঁপানির উপসর্গ কমাতে কাজ করে। এজন্য হাঁপানি রোগীদের অবশ্যই এ মাছটি খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
১০.রুই মাছে খুব কম পরিমাণে চর্বি থাকায় এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। উপস্থিত ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের জন্য ভীষণ উপকারী। এমনকি এটি ক্যানসারের মতো মারণ রোগ থেকেও রক্ষা করে।
১১.মানবদেহে বিভিন্ন ধরণের পুষ্টির প্রয়োজন হয়, যা পূরণ করার জন্য আমরা নানা ধরণের খাবার খেয়ে থাকি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে রুই মাছ। এটি খেলে আয়োডিন, সেলেনিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন, প্রোটিনের মতো খনিজ পদার্থের ঘাটতি পূরণ করা যায়। এগুলো আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
১২.প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় শরীরের সব ধরনের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে। ভিটামিন সি-র ঘাটতির ফলে যে সমস্ত রোগ সৃষ্টি হতে পারে যেমন- স্কার্ভি, দূর্বলতা, রক্তশূন্যতা, রক্তপাত, হাত-পা ও বিশেষ করে পায়ের গোড়ালি বা জয়েন্টের ব্যথা, মাড়িতে আলসার ও দাঁত ক্ষয় ইত্যাদি যাবতীয় শারীরিক সমস্যা দূর করে।